পলক রহমান।।
মায়ায় বেঁধেছি যে সংসার শত যতন করে
দু:খ কষ্ট সয়েও রেখেছিলাম তা আগলে,
চলার পথ যখন ঠেকছে একটি ঠিকানায়
দেখি অনেক কিছুই নেই আর ভাবনার দখলে।
মুক্তিযোদ্ধা বাবার গায়ে ছিল একটা পাঞ্জাবি
রঙ খয়েরী, পরনে ছিল সফেদ ঢোলা পা’জামা,
লাঠি ছেড়ে নিয়েছিলেন স্বয়ংক্রিয় স্টেনগান
কখনও ভাবেনি- পেতে হবে তাকে যোদ্ধার তকমা।
সেই বাবা আমার অভিমানে নিভৃতে হারালেন
ভূলুণ্ঠিত হতে দেখে যুদ্ধে পাওয়া স্বাধীনতা,
মুক্তিযোদ্ধার পাশে চুক্তিযোদ্ধা বড় বেমানান
এখনও কবিগুরুর কষ্ট স্পষ্ট- কাব্যে ‘বঙ্গমাতা’।
বিদ্রোহীর ‘জয় বাংলা’ আজ কন্ঠে মরছে ধুকে
এমন তো কথা ছিল না যুদ্ধে যাওয়ার আগে,
যে তেজস্বী মাভৈ শ্লোগানে কুন্ঠাহীন আত্মত্যাগ-
তা কেন থাকবে না সকল জিহবার অগ্রভাগে?
একটা তপ্ত শিশার সামনে ছিল একটা দীপ্ত প্রান
একটা ফুলের জন্য যুদ্ধ- শেখ মুজিবুর রহমান,
একটা লাল-সবুজের যুদ্ধ ছিল নয় হিন্দু-মুসলমান
একটা স্বাধীনতার যুদ্ধ ছিল- জন্মভূমি পবিত্র স্থান।
ছেড়ে যেতেই হবে অস্ত্র একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা
এ অস্ত্র ধাতুময় নয়, এ যে মর্যাদা রক্ষার অস্ত্র,
যে লালিত স্বপ্ন লালন হল রণাঙ্গন চেতা বক্ষে
তার অর্ধমৃত ছায়ায় এ বুক হাহাকার করে ত্রস্ত।
না বলা কথার আড়ালে কত কথা- মুক্তিযোদ্ধা
দেশ ছেয়ে যাচ্ছে যখন নথিপত্রে চুক্তিযোদ্ধায়,
আগামী প্রজন্ম যেন চিনে নিতে পারে মুক্তিযুদ্ধ
যার বীজ রোপন হয়েছিল একাত্তরের অধ্যায়।
এসো যুবা, এসো জনতা, চোক্ষু করি উন্মুক্ত
জি জি’র রগরগে রঙিন থাবাকে পাশ কাটিয়ে,
রক্ষা করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাবার স্বপ্ন
বিশ্ববাসী দামামা বাজাক সে যুদ্ধ ইতিহাস নিয়ে।
মুখে মুখে হোক এখন বলিষ্ঠ স্লোগান,
স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে হোই আগুয়ান।
১৫ জুন, ২০২৩।
Leave a Reply